রিজিক বৃদ্ধির জন্য কিছু আমল বা কাজ রয়েছে যা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য এবং তিনি এর মাধ্যমে বান্দার রিজিক বৃদ্ধি করে দেন।
![]() |
জীবনে রিজিক বৃদ্ধির রহস্য |
নিচে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আমল উল্লেখ করা হলো:
১. তাকওয়া অবলম্বন করা (আল্লাহকে ভয় করা)
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ"
অর্থ: "যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন যা সে কল্পনাও করে না।"
(সূরা তালাক: ২-৩)তাকওয়া বা আল্লাহভীতি রিজিক বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
২. ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা
নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
"مَنْ لَزِمَ الِاسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا، وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا، وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ"
(আবু দাউদ)
অর্থ: "যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তার জন্য সব সংকট থেকে মুক্তির পথ বের করে দেন, সব দুশ্চিন্তা দূর করেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন যা সে কল্পনাও করে না।"
৩. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা
নবীজি (সা.) বলেছেন:
"مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ، وَأَنْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ"
(বুখারি)
অর্থ: "যে ব্যক্তি চায় তার রিজিক প্রশস্ত হোক এবং তার আয়ু বৃদ্ধি পাক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।"
৪. সদকা (দান) করা
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"مَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ"
(সূরা বাকারা: ২৬১)
অর্থ: "যারা আল্লাহর পথে নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায় এবং প্রতিটি শীষে একশত দানা থাকে।"সদকা রিজিক বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৫. সকাল সকাল রিজিকের জন্য বের হওয়া
নবীজি (সা.) বলেছেন:
"اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا"
(তিরমিজি)
অর্থ: "হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়ে বরকত দান করুন।"সকালে রিজিকের জন্য বের হওয়া বরকতের কারণ হয়।
৬. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ"
(সূরা ইবরাহিম: ৭)
অর্থ: "যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বেশি দেব।"আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা রিজিক বৃদ্ধির কারণ।
৭. নামাজে যত্নবান হওয়া
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ"
(সূরা ত্বাহা: ১৩২)
অর্থ: "তুমি তোমার পরিবারকে নামাজের আদেশ দাও এবং নিজেও এর উপর অবিচল থাক। আমরা তোমার কাছে রিজিক চাই না, বরং আমরা তোমাকে রিজিক দেই।"নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন রিজিক বৃদ্ধির মাধ্যম।
৮. দুই রাকাত সালাতুল হাজাত পড়া
হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোনো হাজত বা প্রয়োজন পূরণের জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর কাছে দুআ করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করেন।
৯. সূরা ওয়াকিয়াহ পাঠ করা
নবীজি (সা.) বলেছেন:
"مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْوَاقِعَةِ كُلَّ لَيْلَةٍ لَمْ تُصِبْهُ فَاقَةٌ أَبَدًا"
(বাইহাকি)
অর্থ: "যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়াহ পাঠ করে, সে কখনো দারিদ্র্যের সম্মুখীন হবে না।"
১০. আল্লাহর উপর ভরসা করা
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ"
(সূরা তালাক: ৩)
অর্থ: "যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।"
এই আমলগুলো পালন করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের রিজিক বাড়িয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ । তবে মনে রাখতে হবে, রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। আমাদের কর্তব্য হলো আমল করা এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখা।
Post a Comment
Thank you for your feedback. Stay with us.