![]() |
ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ আছে। কিন্তু গণহারে ঘোড়ার গোশত খেলে জিহাদের সময় ঘোড়ার মাধ্যমে খেদমত নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহ। |
ঘোড়ার মাংস কি হালাল ?
ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ বা হালাল। তবে এ বিষয়ে কিছু শর্ত ও বিবেচনা রয়েছে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে, যদিও ঘোড়ার গোশত হালাল, তবে তা খাওয়া মাকরুহ (অপছন্দনীয়)। তাঁর যুক্তি হলো, ঘোড়া মূলত জিহাদ, যাতায়াত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গণহারে ঘোড়ার গোশত খাওয়ার প্রচলন হলে জিহাদের সময় বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ঘোড়ার অভাব দেখা দিতে পারে। ( ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, ৫/২৯০)
সুতরাং, ঘোড়ার গোশত হালাল হলেও এর ব্যবহার সীমিত রাখাই উত্তম, যাতে সামাজিক ও ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তায় ঘোড়ার গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যদিও ব্যাপকভাবে ঘোড়ার ব্যবহার হয় না, কিন্তু তা একেবারে বন্ধও হয়ে যায়নি। এখনো অনেক দেশের সিকোরিটি ফোর্সেস তাদের কেন্দ্রগুলোতে ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে । বিশেষ করে সীমান্ত পাহারা, আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ, এবং কিছু বিশেষ অপারেশনে ঘোড়ার ব্যবহার এখনও দেখা যায়। এছাড়াও, ঐতিহ্য রক্ষা এবং প্রতীকী গুরুত্বের কারণে ঘোড়াকে এখনও সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীতে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
তাছাড়া হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে, হযরত খালিদ ইবনে ওলিদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে নাসাঈ ৮/২০৬; সুনানে আবু দাউদ ২/৫৩১)। এই হাদিসই ঘোড়ার গোশত নিষিদ্ধ হওয়ার মূল সূত্র। অন্যদিকে, জিহাদের কাজে ঘোড়ার ব্যবহার একটি প্রাসঙ্গিক দলিল মাত্র। তবে বর্তমানে জিহাদের কাজে ঘোড়ার ব্যবহার কমে গেলেও, উপরোক্ত হাদিসের কারণে ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহে তানজিহি (হালাল কিন্তু অপছন্দনীয়) হিসেবে বিবেচিত হবে।
( সূত্র: আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/১৮৩, ১৮৪; বুখারি ২/৬০৬; মুসলিম ২/১৫০; সুনানে আবু দাউদ ২/৫৩১; দারা কুতনী ৪/২৮৭; উমদাতুল কারী ১৭/২৪৮; বাযলুল মাজহূদ ১৬/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৪৯; ইলাউস সুনান ১৭/১৪৩; ফাতহুল কাদীর ৮/৪১৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯০; মুলতাকাল আবহুর ৪/১৬২; আযযখীরাহ ৪/১০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০৫)
আরেকটি হাদিসে হযরত আসমা (রা.) বলেন, "আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে ঘোড়া যবহ করেছি এবং এর গোশত খেয়েছি।" (বুখারি ৫৫১৯)
এই ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায় যে, ঘোড়ার গোশত খাওয়া হালাল হলেও তা প্রয়োজন ও পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। যদি ঘোড়ার অভাবের কোনো সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে এটি খাওয়াতে কোনো বাধা নেই। তবে সামাজিক ও ধর্মীয় প্রয়োজন বিবেচনায় এর ব্যবহার সীমিত রাখাই উত্তম।
Jazakallah, brother
ReplyDeleteThank you brother
Deletebeautiful
ReplyDeletePost a Comment
Thank you for your feedback. Stay with us.